বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

কবি সুশান্ত হালদার এর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করলো পেখম ।। inerview of sushanto halder

 

         



     কবি সুশান্ত হালদার বর্তমান সময়ের এক উল্লেখযোগ্য নাম। কবি সুশান্ত হালদার মূলত দ্রোহ প্রেমের কবি। কবি তার কাব্য ভাবনার পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা শব্দ বিন্যাসে ইতোমধ্যে পাঠকের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। কবির প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত কবিতার সংখ্যা অনেক। পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বর্গীয় সুবল চন্দ্র হালদার এবং মাতা বিমলা রানী হালদারের জ্যেষ্ঠ সন্তান সুশান্ত হালদার ১০ জানুয়ারি ১৯৭৪ খ্রীস্টাব্দে মানিকগঞ্জ জেলাধীন হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ী ইউনিয়নের সুতালড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন সরকারি চাকুরীজীবি। বর্তমানে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (,পি,আই) পদে কর্মরত আছেন।
পেখমের সাক্ষাৎকার আয়োজনে কবির লেখালেখি ও অন্যান্য বিষয়ের ওপরে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন কবি ও সম্পাদক দ্বীপ সরকার।
 
পেখমঃ লেখালিখির শুরুর কোন ইতিহাস আছে কিথাকলে একটু বলুন এবং প্রেরণার কোন জায়গা আছে কি না

 
কবিঃ  শৈশব থেকেই লেখালেখির প্রতি প্রচন্ড ঝোঁক ছিল। তখন থেকেই রাত জেগে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তাম। ওই সময়ে গল্প বা উপন্যাস লেখার একটা ইচ্ছা পোষণ করতাম। কিন্তু পরবর্তীতে সেই ইচ্ছা আর পূর্ণ হয়নি তবে কিছু ছোট গল্প লিখেছি এবং কিছু বিভিন্ন ম্যাগাজিনে প্রকাশিতও হয়েছে। তারপর পদ্মা নদীর কড়াল গ্রাসের সাথে পাল্লা দিয়ে কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। নানান ঘাত-প্রতিঘাতে সাহিত্য চর্চাটা ভুলতেই বসেছিলাম। হঠাৎ বাবার মৃত্যু আমাকে দিশেহারা করে ফেলে আর তখনই রাতজাগা পাখি হয়েছিলাম ! একদিন রাতে বাবাকে স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি এবং বাবাকে মনে করে কিছু লিখার চেষ্টা করি। সেটা যে কবিতা হয়ে ওঠবে, তাও ভাবিনি কিন্তু পড়ে দেখি আদতে সেটা ছিল কবিতার শরীর।  আর এভাবেই ২০০০ সাল থেকে আমি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কবিতা লিখা শুরু করি। অদ্যাবধি লিখেই যাচ্ছি। 
 
এখন মনে হয় কবিতাই আমার জীবন। ছোট ছোট দু: কষ্ট বেদনা, ঘাত প্রতিঘাত, পারিপার্শ্বিক অবস্থায় সমাজ তথা রাষ্ট্রের অস্থিরতাও আমাকে কবিতার প্রতি ধাবিত করে। প্রেরণার কথা বলেছেন! এর উত্তরে প্রথমেই বলতে হয় আমার পরিবারের পূর্ব পুরুষ কেউ সাহিত্যমনা মানুষ ছিলেন না। কখনো কাউকে কবিতা নিয়ে / টা শব্দ আওড়াতে দেখিনি বা শুনিনিও! পরিবার থেকে কখনো কোন প্রেরণা পাইনি! যা পেয়েছি তা হচ্ছে ভৎসনা! কেউ কেউ পাগলও ঠাওরাইছে (শব্দটি বলতে হাসি পেল) এমনও হয়েছে (আমার দেখাদেখি / জন আজ যারা কবিতা লিখছে,একসময় যারা ফেসবুকই চালাতে সাহস পেত না) আমাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য এইসব ছ্যাঁচড়াদের সাথে হাসিঠাট্টাও করেছে!  
 
তবে হ্যাঁ, প্রথম দিকে আমার অফিসের কলিগদের নিকট থেকে আমি প্রেরণায় উদ্ভাসিত হয়েছি। তারা ভীষণভাবে প্রেরণা যুগিয়েছে। পরবর্তীতে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুবান্ধবদের উৎসাহ উদ্দীপনায় প্রাণিত হয়েছি। এই যে দীর্ঘ পথ, কবিতা লিখায় প্রায় দুই যুগ অতিবাহিত করেছি-এই পথটা সুগম করেছেন সাহিত্য জগতের এক বটবৃক্ষ, আমার মুরুব্বি বীর মুক্তিযোদ্ধা, অনুবাদক এবং প্রবন্ধকার আবুল কাইয়ুম চাচা। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা সহ ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা।
 
পেখমঃ এখনকার প্রজন্ম তো দ্রুত কবি হওয়ার লোভে খুব দ্রুতই বই করেন। তাদের ধৈর্য বা প্রস্তুতি তেমন লক্ষ্য করা যায় না। এক্ষেত্রে আপনার মতামত কি

 
কবিঃ খ্যাতির বিড়ম্বনা' বলে একটা কথা আছে। সেটা হলে তো সমস্যা। পঞ্চাশ বছর আগে সাহিত্য জগতের যে পরিবেশ, তা কি একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল যুগে আছে? অনেক পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করি। এখন অনেক কিছুই সহজলভ্য হয়েছে, তার সুফলও আমরা পাচ্ছি। কিন্তু লেখালেখির ব্যাপারটার মধ্যে রয়েছে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা এবং নির্লোভ থেকে জাগতিক মোহ কাটিয়ে ওঠার এক আজন্ম সাধনা। সাধনায় তেমন কিছু পাওয়ার নেই, যা আছে তা হচ্ছে নিজের মধ্যে নিজেরই আত্ম-তৃপ্ততাসময় অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটায় আর সেই সুবাদেই হয়ত সোস্যাল মিডিয়ায় এখন অনেকেই লেখালিখি করছে বা করছেন। এটাকে আমি সহজভাবেই নেবো এবং সাধুবাদও দেবো। কারণ আমি- আজ যে জায়গায় এসছি তার জন্য এই সামাজিক মাধ্যম অনেকটাই দায়ীকবি দ্বীপ সরকারের সাথে আমার যে অন্ত:রঙ্গতা তা কিন্তু এই সোস্যাল মিডিয়া এবং তার সাথে জড়িয়ে আছে 'কবিতা'  বই করাটা দোষের কিছু না। টাকা পয়সা থাকলে যে কেউ যে কোন বই করতেই পারে কিন্তু আমি কি লিখছি - সে সম্পর্কেও নিজের ধারণা থাকতে হবে। সেটা যদি না থাকে তা হবে তার জন্য মূর্খতা। আর সচেতন পাঠক ঠিকই বোঝে নেবে আসল নকলের প্রার্থক্যটা। এক্ষেত্রে হঠাৎ কবি হয়ে ওঠার ব্যাপারটা দু:খজনক। এখন পর্যন্ত কেউ হঠাৎ কবি হয়ে ওঠেনি। আর যদি হয়েও যায়, তা হবে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মাড়াসময় এবং কবিতার পাঠক এত সস্তা নয়! এখানে মূখ্য ভূমিকা পালন করে ঈশ্বরতুল্য প্রকৃতি।
 
পেখমঃ  আপনার বইঅবন্তীকার কাছে খোলা চিঠি। এই বইয়ে মূলত সবগুলো কবিতা চিঠির আদলে লেখা। মূলত: এর রহস্য যদি বলতেন

 
কবিঃ কবি মাত্রই কষ্টের পরাকাষ্ঠা! অনর্গল সুখে কেউ কোনদিন কবি বা লেখক হতে পারে না কারণ নিজের বা অন্যের সুখে দু:খে কষ্টে বা প্রতিকূল অবস্থায় রাষ্ট্র তথা সমাজের সদা সত্য প্রতিষ্ঠায় একজন কবি বা লেখককে প্রতিনিয়ত ভাবায় এবং সজাগও থাকতে হয়। কখনো কখনো একজন লেখক ব্যক্তিগত প্রতিকূল অবস্থায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েও নিজের ভেতরের  ক্ষরণ দহন প্রেমপ্রীতি ভালোবাসা, সর্বোপরি অন্ধ ধর্মান্ধতার যে হিংস্রতা, তারই পরিপ্রেক্ষিতে সে দ্রোহে দ্রোহান্বিত হয়ে ওঠে। যার বহিঃপ্রকাশ হয় তার লেখায় বা কবিতায়। এমনই এক প্রতিকূল অবস্থায় আমি আমার প্রিয়তমার কাছে প্রকাশ করেছি নিজের অস্থির সমাজ রাষ্ট্র  ইতিহাস ঐতিহ্য সহ ভঙ্গুর সমাজের শঠ প্রতারক নীতিবিবর্জিত মানুষের হালহকিকতের কথা। এমনই এক ব্যক্তিসত্তায় রচিত হয়েছে আমার পত্রাধর্মী এক কাব্যগ্রন্থ "অবন্তীকার কাছে খোলা চিঠি" কল্পিত এই অবন্তীকাই আমার মানসরূপী প্রেমিকা। যার জন্য এত সংগ্রাম, এত তিতিক্ষা!
 
পেখমঃ যতদুর জানি আপনার ১৪ টি বই। এগুলোর মধ্যে আপনার কোন বইটি পাঠকপ্রিয় বেশি বলে মনে করেন?
direct link 

কবিঃ ১৪ টি নয়, ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমার ১৭ টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। পাঠকপ্রিয়তায় তো একাধিক বই আছে। এর মধ্যে 'লাশকাটা ঘর' 'নীলা' 'অবন্তীকার কাছে খোলা চিঠি' 'একটি যুদ্ধ প্রেম' 'অনির্বাণ' 'পুষ্পের আহাজারি' 'আগুন বুকে পথ চলি' অন্যতম। 
এরমধ্যে 'নীলা' কাব্যগ্রন্থ থেকে ২৭ টি কবিতা নিয়ে দেশবরেণ্য প্রখ্যাত আবৃত্তিকার মাহিদুল ইসলাম মাহি ভাই সিডির এ্যালবাম করেছেন - "নীলার জন্য নীল খাম" এবং 'অবন্তীকার কাছে খোলা চিঠি' থেকে ১০ টি কবিতার সমন্বয়ে এ্যালবাম করেছেন বাচিকশিল্পী সাফিয়া খন্দকার রেখা। আপনিও হয়ত শুনেছেন।
 
পেখমঃ কবিতা সাহিত্যের আদি একটা অনুষঙ্গ। এর রূপ বলয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন চিন্তা বা সংঙ্গা নেই। আপনি বিষয়ে একটু বলুন

 
কবিঃ কবিতাই সাহিত্যের আদি রূপ এবং এই রূপ থেকেই সাহিত্যের বিভিন্ন বলয় সৃষ্টি হয়েছে। আদিতে অলিখিত কবিতা মুখে মুখে একজন থেকে বহুজনে ভাষার বলয়ে টিকে থাকতো। পরবর্তীতে লিখিত আকারে যখন কবিতা স্থায়ী রূপ পায়, তখনই আসে এর অনুষঙ্গ। অনুষঙ্গোস্থিত কবিতার শরীর গঠনে তখনই  আসে উপমা উৎপ্রেক্ষা ভাব রস ছন্দ কল্পচিত্র। আর এসব অনুষঙ্গ ব্যতিরেকেও যে কবিতা হয় না, তা কিন্তু নয়। তবে অনুষঙ্গহীন কবিতায় কমে যায় পাঠকপ্রিয়তা, আর এজন্যই একজন মেধাবী কবিকে হৃদয়ে শব্দের ভাণ্ডার জমিয়ে রাখতে হয়। কবিতার শরীরে সেই রূপ রস গন্ধে  পাঠক চিন্তার সাগরে ভেসে বেড়াবে আর এর রস আস্বাদনে পাঠক ব্যাকুল কাতরতায় জীবনবোধ দর্শনে অনুসন্ধিৎসু হবে ভাষার ভিন্নতা থাকলেও সৃষ্টিতত্ত্বে একই রূপে এখনও টিকে আছে কবিতার রূপ বলয়। যা সুনির্দিষ্ট কোন চিন্তা বা সংঙ্গায় একে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। তবে ব্যক্তি মনস্তত্ত্বে এর ভিন্নতা পরিলক্ষিত হতে পারে। যা কবিতার শক্তিমত্তায় সর্বজনগ্রাহ্য নাও হতে পারে। তবে, 'কবিতা' সাধনা প্রসূত ফল বলে এর আদি রূপই টিকে থাকবে সবিস্তারে সর্বসাধারণে!
 
পেখমঃ "পাঠকের সাথে আপোস" বলে একটা কথা শোনা যায়। আসলে পাঠকের সাথে আপোস করে কাব্য লেখার বিষয়টা আপনার নিকট কেমন মনে হয়?  

 
> কবিঃ
 কবি তার নিজের চিন্তা চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই কবিতা লিখবেন। সেক্ষেত্রে কবিই সেই কবিতার রূপকার! আর পাঠক সেটা পাঠ করে কবিতার ভাবগাম্ভীর্যে উত্তেজিত বা চিন্তাশীল হবেন আর রসাস্বদন করবেন। এটাই তো কথা।  উলটো যদি পাঠকের মনগড়া চাহিদা মাফিক কোন কবি কবিতা লেখেন তাহলেতো কবির নিজস্বতা থাকে না। এক্ষেত্রে কবিতা মৃত বলে গণ্য হবে। ইদানিং কালেই শুনছি এইসব উদ্ভট কথাবার্তা। পাঠকের সাথে আপোস করে আসলে কবিতা লেখা যায় না। যারা লেখেন তারা হয়ত বই বিপণনের কথা ভেবেই 'আপোস' শব্দটি বানিজ্যিকিকরণ করার চেষ্টা করছেন।
 
পেখমঃ বাংলা সাহিত্যে কোন ঘাটতি বা অন্তরায়ের কারণে বিশ্ব দরবারে এর বিস্তৃতি পাচ্ছে না? একটু বলুন?
 

কবিঃ কবিতার শক্তিমত্তায় এখনও যে ভালো কবিতার প্রভাব নেই, তা কিন্তু নয়! আগে আমরা বাংলা ভাষায় অনুবাদকৃত ভিনদেশী ভাষার গল্প উপন্যাস কবিতা পড়েছি, এখনো পড়ছি। বিশ্ব দরবারে আমাদের বাংলা ভাষার কতটা প্রভাব (?) বা অন্য ভাষাভাষীদের নিকট কতটা সুচারু ভাবে আমরা আমাদের কবিতা গল্প উপন্যাস  তাদের ভাষায় উপস্থাপন করতে পারছি- সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। আমাদের যে ইচ্ছাশক্তির সীমাবদ্ধতা তার সাথে যোগ হয়েছে বিপণন ব্যবস্থায় প্রকাশকদের অর্থ লগ্নির অনীহা, সাথে বই প্রকাশে গভর্মেন্টের অনুদান সঙ্কুচিত করা। বর্তমান সময়ে সাহিত্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী ভিত্তিক  অন্তর্ঘাত মূলক অব্যবস্থাপনা এবং ক্রেস্ট বানিজ্যও এই ঘাটতি বা অন্তরায় বলে আমি মনে করি। পরিশেষে বলবো - আভ্যন্তরীণ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বইমুখী পাঠক তৈরি না করাই এই অন্তরায়ের মূল কারণ।
 
পেখমঃ  কবিতায় রাজনৈতিক দর্শন ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অথচ কবি নজরুলদের সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা যেমন প্রকট ছিলো এখনও আছে। এ ক্ষেত্রে কবিদের করণীয় কি?

 
কবিঃ 'সময়' মানুষের জীবন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রেরও পরিবর্তন ঘটায়। এক্ষেত্রে ইংরেজ পত্তনে উপনিবেশবাদী আগ্রাসন, সাতচল্লিশের দেশভাগ, বাহান্ন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামে  রক্তাক্ত একাত্তর, - ওই সময়ে মানুষের মধ্যে যে একনিষ্ঠ দেশপ্রেম, শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াকু যুদ্ধংদেহী মনোভাব আর মুক্ত চিন্তায় জ্বলে ওঠার যে আত্মবলিদান ; সেই প্রেক্ষাপটেই সৃষ্টি হয়েছে আমাদের যতসব গর্বিত ইতিহাস।  সেই অস্থিরতায় কবি নজরুল লিখেছিলেন 'বিদ্রোহী' কবিতা। পৃথিবীর ইতিহাসে যা সৃষ্টি তত্ত্বে এক অমর কবিতা। পাঁচ ' বছর বা হাজার বছর পরেও এরকম রক্ত গরম করা দ্রোহের কবিতা কেউ লিখতে পারবেন কিনা সন্দেহ!  বর্তমান অস্থিরতা তো আভ্যন্তরীণ কোন্দল আর ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকার এক কুক্ষিগত অপচেষ্টা। তারপর জাতিগত ভাবেও আমরা দ্বিধান্বিত এবং ধর্মান্ধতায় আজও কুসংস্কারাচ্ছন্ন। মুক্তচিন্তায় শাণিত কলমও সাম্প্রদায়িকতার রোষানলে বাধাগ্রস্ত। তাই এই অস্থিরতার যে দর্শন তা শুধু আত্মশুদ্ধির প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপেক্ষা করা ছাড়া কবিদের আর এখন করার কিছুই নাই! সময়ই বলে দেবে কখন কাকে কি করতে হবে!
 
পেখমঃ পেশাগত কারণে আপনি অনেক ব্যস্ততার মানুষ। এখানে কোন সময়টা সুযোগ করে নেন?

 
কবিঃ যেহেতু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে (হাসপাতাল) চাকরি করি এবং জবাবদিহিতা মূলক তাই নীতিগত আদর্শেই সব কাজই সুচারুভাবে করার চেষ্টা করি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (E.P.I) পদটা চ্যালেঞ্জিং ছিল আমার জন্য বিগত বছর, বিশেষত কোভিড-১৯ পেন্ডেমিক সময়কাল। রাতদিন কাজ করতে হয়েছে। কোল্ড চেইন মেন্টেইন করে  ভ্যাকসিন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে মাঠ পর্যায়ে টিকা সরবরাহ এবং প্রতিবেদন সব কুলিয়ে ওঠা সত্যিই দূরুহ ছিল। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে দেশের প্রতি অকৃত্রিম দায়িত্ববোধ থেকেই কাজ করেছি এবং করছি। পড়া আর লেখার জন্য যতটা সম্ভব কাজ পেন্ডিং না করে বিকেলবেলাটা চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করি আর সময় সুযোগ বুঝে ধ্যানস্থ হই কবিতার সাধনায়। 
 
পেখমঃ তরুণদের অস্থিরতা থেকে বেড়িয়ে আসার কিছু উপদেশ যদি দিতেন। এবং তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি

 
কবিঃ চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই অস্থির। আর কবিদের সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধি, তার দৃষ্টির প্রখরতা তো অস্থিরতাই বাড়াবে। আর এই অস্থিরতা প্রশমনের একমাত্র উপায়ই হচ্ছে নিরাপদ প্রসবে নিজেকে সৃষ্টিশীল রূপান্তরে ধ্যানস্থ মানুষ করে তোলা।  উপদেশ দেয়ার মতো এই অস্থির সময় প্রজ্ঞাবান মানুষ কিন্তু আমি নই। তবে পরামর্শ হচ্ছে - যারা সাহিত্য চর্চা করি, তারা যেন কারো অশুভ কূটকৌশল হিংসা বিদ্বেষ প্রলোভনে পড়ে এই নির্মোহ পথ থেকে ছিটকে না পড়ি। পথটা দীর্ঘ এবং একান্তই নিজের তাই বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করেই এই একনিষ্ঠ সৃষ্টিশীল সাধনায় রত থাকতে হবে। সাহিত্য জগতে দেখি কবিদের মধ্যে রেষারেষি, কে কাকে পিষে ফেলবে, হিংসাত্মক মনোভাব আর ব্যক্তিগত আক্রোশে কলুষিত করছি প্রকৃতিজাত শুদ্ধ সুন্দর পরিবেশ ; গ্রুপ সংগঠন করে অনেকেই হয়ে যাচ্ছেন দিনের সেরা কবি, ঘরে তুলে নিচ্ছেন ভারী-ভারী সম্মাননা ক্রেস্ট - আসলে এইসব বাহারি উপঢৌকন আর হীনমন্যতা আমাদের কোন কাজেই আসবে না যতক্ষণ নির্বাণ স্বভাবে আমরা মানুষ হতে না পারি
  
পেখমঃ সাহিত্য বিকাশে বর্তমান সরকারের আশা বা হতাশার জায়গাটা যদি বলতেন

 
কবিঃ একটা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে সেদেশের কৃষ্টি কালচার ইতিহাস ঐতিহ্য এবং তা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে কবি সাহিত্যিক আর গণমাধ্যমের প্রজ্ঞাবান কর্মী। রাজা এবং রাজ পরিবার দেবেন পৃষ্ঠপোষকতা। এভাবেই সময়ের নির্দয়তার মাঝেও টিকে থাকবে অনিন্দ্য এই মানব সভ্যতা  বর্তমান সরকার '৭১ পক্ষের শক্তি বলেই দেশ জাতির উন্নয়নের জন্য দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। সাহিত্য বিকাশে যতটা প্রত্যয় আশা করা উচিত, ঠিক অস্থির রাজনৈতিক দোদুল্যমানতায় তার সুফল ভোগ করছে একশ্রেণির লেবাসধারী হাইব্রিড কিছু স্বার্থান্বেষী পদ পদবী চাটুকারবেষ্টিত সমাজ! আর এর থেকে উত্তরণের পথ স্বাধীনতা পক্ষের শক্তিই বাতলে দেবে। সেই আশা করাটাই কি সমুচিত নয়?
 
পেখমঃ কবিতায় নিজস্বতা তৈরি যাকে নিজস্ব স্বর বলি। এর গুরুত্ব আসলে অনেক। কিন্তু সিংহভাগ কবি নিয়ে ভাবছেন না। তারা নিজেকে ভাঙতেও পারছেন না গড়তেও পারছেন না। নিয়ে আপনার মতামত কি
ads
 
কবিঃ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই বাহ্যগতভাবে আলাদা। কারোর সাথেই কারোর চেহারার মিল/সাদৃশ্য নাই। বুদ্ধিমত্তা আচার আচরণেও আছে ভিন্নতা। ব্যক্তি বিশেষে এই বৈশিষ্ট্যের জন্যই আলাদাভাবে প্রত্যেককে চিনতে পারি। তদ্রুপ প্রতিটি ব্যক্তিরই থাকে তার অন্তর্গত বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ক্ষমতা, যার সাক্ষ্য একজন কবির কবিতা। এতে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে  নিজস্ব চিন্তা চেতনা। যেমন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় প্রকট হয়েছে তাঁর নিজস্বতা, তেমনি বিদ্রোহী কবি নজরুল, বনলতা খ্যাত জীবনানন্দ দাশের কবিতা। এই নিজস্বতা বা স্বরই একজন কবিকে মৃত্যুর পরেও বাঁচিয়ে রাখে স্ব স্ব ক্ষেত্রে নিজস্ব সৃষ্টিশীলতা। অতএব নিজের পথ নিজেরই তৈরি করতে হবে অন্যথায় অনুকরণে অন্যের পথে হাঁটলে নিজের অস্তিত্বই একদিন বিলুপ্ত হবে। থাকবে না কবির কোন আইডেনটিনিজেকে ভাঙতে না পারলে তো নিজেরই অক্ষমতা। আর অক্ষম ব্যক্তির নাম ইতিহাস মনে রাখে না। 
 
পেখমঃ একটা আদর্শ কবিতা নির্মাণে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন

 
কবিঃ নিজের চিন্তা চেতনা বোধ বুদ্ধি, ক্ষয়ক্ষতি ঝড়,দু: কষ্ট, যাপিত জীবনের চাওয়া না পাওয়া, মন:কষ্টের পারিপার্শ্বিক অবস্থায় যে অনুচ্চারিত জারক সৃষ্টি হয়, সেই সুপ্তাবস্থা ইচ্ছাশক্তির বিরুদ্ধে ধেয়ে আসা ধাবমান শব্দের যে বহিঃপ্রকাশ- যা কল্পচিত্রময় ছন্দ রূপক উপমা উৎপ্রেক্ষায় শব্দের প্রচ্ছুত ছায়ায় লিখিতভাবে প্রকাশ করা হয় ; তাই কবিতা। কবিতার এই শরীর গঠনে নিশ্চয়ই কিছু অনুসঙ্গ থাকা প্রয়োজন, যা এই কবিতার সঙ্গায় উল্লেখ আছে। যেমন () কল্পচিত্র () রূপক/উপমা () ভাব বা রসবোধ () ভাষার সুললিত গঠন। এইসব অনুসঙ্গের সমন্বয়েই গঠিত হয় কবিতা। কবিতায় যদি কল্পচিত্র অনুপস্থিত হয় তাহলে সেই কবিতা পাঠে পাঠক সবিস্তারে চিন্তার উন্মেষ ঘটাতে পারেন বলে কাল তা ধরে না। তাই কল্পচিত্র সমৃদ্ধ কবিতা নির্মাণেই জোর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
 
পেখমঃ বর্তমান সময়ে পুরস্কার/পদক আদান প্রদানের বিষয়ে অনেক অভিযোগ লক্ষ্য করা যায়। আসলে এর থেকে উত্তীর্ণের কোন দিক আছে কি

 
কবিঃ ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য বাঁশের কোড়লের মতো দেশে কবিতাভিত্তিক নানান ধরনের গ্রুপ/সংগঠন গড়ে ওঠেছে। গ্রুপে কবিতা পোস্ট করে তারা কাউকে দিনের সেরা কবি করে দিচ্ছে সাথে পোস্টার টাঙিয়ে  সার্টিফিকেট প্রদান বা কাঁটাবনস্থ ক্রেস্ট দিয়েও সম্মাননা প্রদান করছে। আসলে এর মূল উদ্দেশ্য কিমোদ্দাকথা - এসব করে কিছু অসৎ ধান্ধাবাজ লোকের রুটি রোজগারের ব্যবস্থা করা। তারা গ্রুপ সদস্যদের নিকট থেকে মাসিক চাঁদা নিচ্ছে, এসব করে দিনশেষে কিছু খরচ করছে আর মহানব্যক্তি হিসেবে নিজেকে জাহির করছে। যখন কেউ বুঝে ফেলে এইসব গোলচক্করের কথা ততদিনে ওই লিখিয়ের লেখালিখির কম্ম সারাউত্তীর্ণের কোন পথ আপাতত নাই কারণ আমরাই ওইসব রাঘববোয়ালদের পাতাফাঁদে পড়েছি। তারা কিন্তু কবিতার আসর/আড্ডা বা এইসব ক্রেস্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে নামিদামি বড় বড় কবিদের ভাড়া করে নিয়ে আসে আর তাদের হাত থেকে উত্তরীয় সমেত ক্রেস্ট নিয়ে নিজেকে বড় কবি ভাবছে এবং ফেসবুকে সেইসব ছবির পোস্ট দিয়ে তা সগৌরবে প্রচারও করছে। যাদের দিয়ে এসব বন্ধ করবেন, তারাই বরশি  গিলে বসে আছে। তবে নতুনরা এসব বয়কট করলে সাহিত্যের এই দুরাবস্থা সুস্থ করে তোলা সম্ভব!  
 
পেখমঃ মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য বর্তমান বিশ্বে বহু element তৈরি হয়েছে/হচ্ছে। সেখানে কবিতা মানুষের কতটা কাছে যেতে পারছে এবং চিত্তাকর্ষণ করতে পারছে। বলুন

 
কবিঃ আমাদের দেশে কবিতার পাঠক কমে যাচ্ছে। 'যারা কবি তারাই পাঠক' এরকম অবস্থায় কবিতা নিয়ে কেউ চিত্তাকর্ষক element তৈরি করতে যাবেন না। প্রকাশকদের কথাই ভাবুন, তারা কি করছেলেখকের কাছ থেকেই টাকা নিয়ে বই ছাপছে আর সেই বইয়ের প্রচার প্রসারের দায়িত্বও সেই লেখকই নিচ্ছে। বই যা বিক্রি করছে, তার টাকাও প্রকাশকই নিচ্ছে। মারা যা খাবার লেখকই খাচ্ছে! মাঝখান থেকে লাভবান ওই ধান্ধাবাজ প্রকাশকই হচ্ছে ! আবার এই প্রকাশকই অমর সব কবি, উপন্যাসিক, প্রবন্ধকারদের বিনা পয়সায় বই ছাপিয়ে প্রকাশনীর লাইসেন্স বাগিয়ে নিচ্ছে। আসলে বিশাল পরিবর্তন দরকার। আমিতো ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি! পচন ধরেছে সারা দেহে। ওষুধ লাগাবেন কোথায়আম পচা খাওয়া যায় কিন্তু কাঁঠাল পচে গেলে খাওয়া যায় না। তাই মানুষকে বইমুখী করতে না পারলে সাহিত্যের আদি অনুসঙ্গ কবিতা' কিছুই হবে না! দেশে অসৎ ধান্ধাবাজ শঠ প্রতারকে ভরে গ্যাছে! এর উত্তরণ খুব শীগ্র না হলে নতুন প্রজন্মই আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য একসময় ভুলে যাবে! সেক্ষেত্রে মানুষ থেকে কবিতার দূরত্ব আরও বেড়ে যাবে !
 
পেখমঃ সৃজনশীল মানুষগুলো বিশেষ করে কবিরা সামাজিকভাবে অবমূল্যায়িত হয়ে থাকে। তারা বলেন, যেখানে অর্থের উৎস নেই সেটা করে লাভ কি? সাহিত্য করে সবাই গরীব হয়। ফলে কবিদের ভালো চোখে দেখেন না! বিষয়ে আপনার মতামত কি?  

 
কবিঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রশ্ন করেছেন। যদি বলি, ধ্যানস্থ সাধনায় প্রাপ্ত জ্ঞানই কবিতা। আর ধ্যানে ঐশী শক্তি লাভে একজন কবিকে ধ্যানস্থ হতে হয়। কবিতা সৃষ্টিশীলতার আদি এবং উৎকৃষ্ট ধাপ, তাই সব মানুষ কবিতার মানুষ হয় না আবার জ্ঞানী, বড় বড় ডিগ্রীধারী মানুষও কবিতা লিখতে পারেন না। নীতি আদর্শচ্যুৎ মানুষ কবি হতে পারেন না। তাঁকে কঠোর সময়ের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। নিজের ভেতরের ভাঙা গড়ার প্রবাহিত যে স্রোত, তা কাটাতে একজন কবিকে অনর্গল কাঠখড় পোড়াতে হয়। এ যুদ্ধে অপসংস্কৃতি, অন্যায় অত্যাচার, সমাজের ষণ্ডা গণ্ডা প্রতিপক্ষ হয়। অন্ধকারের বিপরীতে আলোর সন্ধানে তাকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। নির্লোভ আর প্রকৃতির মতো শুদ্ধ, সুন্দর হতে হয়। তাই তাকে জীবদ্দশায় অর্থ বিত্ত আর জাগতিক ভাবে কামমুক্ত থাকতে হয়। এসব ডিঙিয়েই একজন কবিকে সামাজিকভাবে বেঁচে থাকতে হয় বলেই কবি জীবন নানান সংঘাতময় হয়। এক্ষেত্রে পরিবার তথা ঘুণেধরা সমাজ কবিকেও তাদের প্রতিপক্ষ ভাবে কারণ একজন কবি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বলে, সুস্থ সমাজ গঠনের কথা বলে, মুক্তচিন্তার কথা বলে বলেই অসৎ মানুষ তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার কুটচালে অনবরত লিপ্ত থাকে। এজন্য কবি নিজেকে সমাজের অনেক ক্ষেত্র থেকেই নিজেকে গুটিয়ে ফেলে আর একাকিত্ব বোধে নিজের সাধনায় মগ্ন থাকে। কবি কখনো তার সৃষ্টি বিকিয়ে পয়সা কামান না, তার সম্মাননা মানুষের প্রেম ভালোবাসা ভক্তি শ্রদ্ধা। সে কখনো অসৎ উপায়ে নিজের সৃষ্টি বিক্রি করে অর্থ উপার্জনের ধান্ধা করেন না। তাই যদি করতেন তাহলে জমিদার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অর্থ কষ্টে ভুগতেন না। বিদ্রোহী কবি নজরুল ঢাকার শহরে বাড়ি করতে পারতেন থেকে টা। আজকের আধুনিক কবি জীবনানন্দ দাশ ট্রামের চাকায় পিষ্ট হতেন না!  কে কিভাবে দেখলেন বা ভাবলেন তা নিয়ে এখন আর ভাবি না। তবে হ্যাঁ..অর্থ কষ্ট একজন কবিকে সৃষ্টিশীলতা থেকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলতে পারে। পরিবার পরিজনও মন:কষ্টে কবির 'পর মনোক্ষুণ্ণ হয়ে সাময়িক অভিমানে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে- যা সত্যিই পীড়াদায়ক! আসলে জীবদ্দশায় একজন সত্যিকারের কবির তেমন কিছু পাওয়ায়নেই। তাঁর প্রত্যাশা থাকে শুধু একটা সুস্থ সুন্দর সমাজ বা রাষ্ট্র গঠনে যেন মানুষ 'প্রেমময় মানুষ' হয়ে উঠতে পারে
 
পেখমঃ কাজের (কবিতা) মূল্যায়ন হিসেবে আপনার কোন প্রাপ্তিযোগ থাকলে একটু বলুন?

 
কবিঃ 'অনির্বাণ' কাব্যগ্রন্থের জন্য কাব্যকথা সাহিত্য পরিষদ থেকে সাত বীরশ্রেষ্ঠ সম্মাননা-২০১৬ এবং একই সংগঠন থেকে 'ধূলিঝড়' কাব্যগ্রন্থের জন্য জাতীয় সাহিত্য সম্মাননা স্মারক- ২০১৬ সহ সাপ্তাহিক অন্যধারা সম্মাননা স্মারক- ২০১৬ অর্জন করি ।'নীলা' কাব্যগ্রন্থ' জন্য ত্রৈমাসিক সাহিত্য দিগন্ত পুরস্কার ২০১৮ অর্জন করি। এই যা !
 
পেখমঃ পেখমকে সময় দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। 

 
কবিঃ এর আগেও আমি সাক্ষাৎকার দিয়েছি কিন্তু এবারের প্রশ্নগুলো ছিল ভীষণ চমৎকার এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে সন্নিবেশিত। যার উত্তর দিতে আমি সাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি আর আমার সীমাবদ্ধতার জায়গা থেকে যতটুকু পেরেছি খোলামেলা উত্তর দিতে চেষ্টা করেছি। 'পেখম' সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য কুয়াশা ও পেখমের গুণী সম্পাদক, কবি দ্বীপ সরকার কে ধন্যবাদ সহ কবিতাময় ভালোবাসা জানাই, সেই সাথে  'পেখম' জন্য শুভ কামনা রইলো