বঙ্গবন্ধু, একটি অমর কন্ঠস্বর
এম এ রহমান
যখন দিনের আলো ঢাকে বৈষম্যের কালোরাতে
তেরশত নদী স্রোতে নোনাজল মিশে করে হাহাকার
যখন অত্যাচারের তীব্রদাহে ফাটে বাংলার মাটি
ঠিক তখনি একটি কন্ঠস্বর হেঁটে বেড়ায় বাংলায়
শহরের কানাগলি,সবুজের ক্ষেত,মেঠোপথ চারিদিকে।
একজোড়া চোখের অতলে একটি স্বপ্নের সিঁড়ি
দীর্ঘ হতে থাকে - টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।
তারপর ত্রিশ লক্ষ লাশের সোপান পেরিয়ে পেয়েছি-
একটি মুক্ত আকাশ-অন্ধকার তাড়ানো একটি সূর্য
যার আলো শোকাহত শিশির ভেজা সবুজ দূর্বাদলে
হীরের মতই চকচকে, বিচ্ছুরিত আলোকে গড়ে রামধনু।
তারপর সেই শিল্পী রঙতুলিতে আঁকতে থাকেন
একটি পতাকা,একটি মানচিত্র নিখুঁত রঙে।
পনের আগস্ট, একদল বুভুক্ষু শকুন রক্ত খায়
ক্যানভাসে টেনে দেয় এক কালো পর্দার নেকাব।
সময়ের পাখি ফিরে-পতাকা উড়ায় আকাশের পানে
জীবন্তের চেয়ে বেশি এক অশরীরী পতপত কন্ঠস্বর
আজো কথা বলে মানচিত্রের একান্ত ভিতর থেকেই।
একটি পূর্ণিমা রাত
শোষিত বাংলার বুকে যখন তৃষ্ণায় হাহাকার
অত্যাচারের ধোঁয়ায় যখন সন্ধ্যারা নেমে আসে
বৃক্ষরা ছায়া গুটায় নিশ্চুপ শোয় রাত্রির কোলে
বৈষম্যের পোড়া গন্ধে যখন বাতাসের ক্রন্দন
তখন রাত্রির বুকে জোনাকে জ্বলে আশার আলো
রাজপথে পড়ে থাকে জোনাকের বায়ান্নর দেহ।
তারপর জোনাকের আলোগুলো মার্চের রাতেই
আলো বিবর্ধন মন্ত্রে পরিনত হয় চাঁদের আলোয়
অন্ধকার খসে খসে জেগে উঠে পূর্ণিমার আলো
তখন বাতাসে ভাসে গন্ধরাজ ফুলের সুঘ্রান
আর জোছনা আলোয় চুয়ে চুয়ে পড়ে স্বাধীনতা।
স্বাধীনতার সুঘ্রান
সেদিনের অন্ধকার রাত্রিগুলো এতো নির্জন ছিল না
ফুরফুরে বাতাসের শীতল শরীরও ছিলো না
ছিলো না জোছনা মাখা রাতের শান্তির ঘুম
সেদিন-রাতগুলোর অন্ধকারে লুকিয়ে ছিল বৈষম্য
অত্যাচারের বিবশ চিৎকারের আহত বাতাস
লুন্ঠনের কাটাতারে ঝুলানো ছিল জোছনা আলো।
সাতকোটি অন্ধকার হৃদে যখন ভারী নিঃশ্বাস
যখন অত্যাচারের কালো ধোঁয়ায় অাঁধার নামে
ঠিক তখনি একটি তর্জনী সূর্যের মতো আলো বিকিরণ করে
বাতাসে ছড়িয়ে দেয় স্বাধীনতার সুঘ্রান
সতেজতা ফিরে আসে- জেগে উঠে কোটি কোটি প্রান।
সেদিনের তর্জনীর দ্রুতি অসীম সাহস বাঙ্গালী বুকের
মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসায় জ্বলে লেলিহান শিখা
উজ্জীবিত করে এক সাগর নোনতা রক্তে
রক্ত চোষক জোঁককে চুবিয়ে মারতে।
সেদিনের তর্জনীর কম্পাংকে আন্দোলিত কোটি প্রাণ
দূরে কোথাও কোকিল - গেয়ে যায় বসন্তের গান।
বঙ্গবন্ধু
কে বলেছে তুমি নেই তুমি মিশে আছো বাংলায়
বাংলার সবুজের ঘ্রাণে বাঙালির রক্তে মিশে
বাংলার ফুসফুসে তুমি আজও চালাও শ্বাস
বাঙালির চোখে দেখ বাংলার অপরূপ রূপ।
বাংলাদেশের অনুভবে আছো তুমি অনির্বাণ হয়ে
তবে কে বলেছে তুমি নেই তুমি আছো মুক্তমঞ্চে
বাংলার তরুণের বজ্রকণ্ঠে শিরা উপশিরা রক্তে
পদ্মা যমুনা মেট্রো রেলে বাংলার স্বপ্নে মিশে।
বাংলার নিউরনে তুমি স্থায়ী স্বপ্ন সবুজের
তুমি যে বিবেক বাঙালির-বাংলার পিতা
কে বলেছে তুমি নেই তুমি আছো বাংলার মাটিতেই
বাংলার পাঁজরের হাড়ে বাঙালির মেরুদণ্ডে।
তুমি আবে হায়াতের জলে পেয়েছ যে অমর শরীর
তোমাকে ছালাম বঙ্গবন্ধু-শেখ মুজিবুর রহমান।
মুজিব মানে
মুজিব মানে বজ্রকণ্ঠ
শত্রুর কাঁপা বুক
মুজিব মানে প্রলয়শিখা
শত্রুর পোড়া মুখ।
মুজিব মানে স্বাধীনতা
আঁধার তাড়া সূর্য
মুজিব মানে অসীম সাহস
রণাঙ্গনের তূর্য।
মুজিব মানে দেশের ছবি
বুকের মধ্যে ধারন
মুজিব মানে শত্রুচোখে
দেশকে দেখা বারন।
মুজিব মানে চিরসবুজ
বাংলাদেশের হাসি
মুজিব মানে সোনার বাংলা
তোমায় ভালোবাসি।
إرسال تعليق