মোস্তফা হায়দার এর গুচ্ছ কবিতা ।। ঈদের বিশেষ আয়োজন ।। পেখম


সত্য বড় বেয়াদব!

তিন তিনবার প্রমোশন ভাইভা দিতে হয়েছে তাহাকে 
জুড়িবোর্ডের সামনে চলছে সময়ের বলাৎকার
বাঙালি বলে কথা,
কবি বলেন তো, আজ কী কবিতা লেখা হয়েছে;
আশ্চর্যের লোনাচোখে অবদমিত স্বপ্নের ডান্ডা ওয়ালা মুদ্রাপিঠ।

এবার শীতের কুয়াশার জাল ভেদ করে সম্মুখের যাত্রা
জুরি বোর্ডের সামনে যেতেই হাসির উচ্ছ্বাস
কবি সাব বলেন তো, তিনি কেমন?
যাঁহার কথা বলতে গিয়ে ভেতরের ঢেউ ওঠেছিল উৎলে
ভেঙে চলেছে স্বপ্নের বিশ্বাসের স্রোতধারা।

আহারে অবসরে পাঠানোর চিত্রে ভাসে কত নির্মম ভালোবাসা
যে ভালোবাসায় প্রেয়সি উড়ন্তচুলে চেয়ে থাকে ভোগের কার্ণিশ।
জনতার জনমত,জনতার ভালোবাসা
পূর্ণিমা রাতের আলোর তির্যকের চেয়ে অনেকবেশী ক্ষুরধারা!

সে বার তাঁহারা কয়েকজন জুড়িবোর্ডে যাওয়ার প্রাক্কালে লালবিল্ডিং এ ঢুকেন
সংবাদের কারিশমাটিক ইঙ্গিতে কাহারো কাহারো ভাইভাহীনে প্রমোশন!
আর অভাগা সোনার মুকুটগুলো ভাইভা দিতেই আছে
তিনি এক জোয়ারে ভাইসা গেছেন
ইজ্জতের খেরোখাতায় নিয়ে গেছেন 'খড়ের গম্বুজের ' ছাই!

তিনি বিশ্বাসের করিডোরে বাহুবাঁধা এক ভদ্রমুখোশ
ক্ষীণকায় কায়ার ছায়ায় ভেসে কতপ্লেট করে গেলেন চুরমার
সংস্কৃতির বেহালায় তিনি মোড়ল সম্পাদক
আপাদমস্তক এক ক্রসফায়ার যোগ্য স্বর্ণালি বাবুজি
তাহার অনলে পুড়ছে কত মেধার নির্বাচিত সময়
ধিক্ জানাবার এ বাহুকায় ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই!!!


মুখের বুর্জোয়ায় অস্বীকার


সকালের রোদে তোমাকে খোঁজে
ভিটামিন পাড়ায় রেখেছি পাদুকা,
সীমানার চিকচিকে আচমকা হাওয়ায়
ভেতরের ঘরে করেছি ঘুমের নিনাদ।

মৃতশিল্পের গতর খুঁইজ্জ্যা আর কত নিঃশ্বাস নেবো
কাহাকে শোধাবো ভেতর যন্ত্রণার সূত্রাবলি!
ভূল স্লোগানে জাত যায় না
জাত যায় জরায়ুর প্রবাহিত ছেদায়!

পোশাকের নির্মমতা হারাতে বসলে
দিন আর রাতে থাকে না কোনো দেয়াল,
মুখের বুর্জোয়ায় অস্বীকারের দ্যুতি ওড়ে
প্রতিশোধের সিম্পনি বড়ই ভয়ানক!

ভিটামিন ডি- এবিসি কোনোটাই কাজ করে না রস্মিতে
হিংসার অনলে পুড়ে ছারখার লাল সবুজের বাংলাদেশ!


ইচ্ছেরা পুঁজিবাদের বংশীবাদক


প্রতিদিন ভাবি একটু প্রেমে পড়বো, মজবো
কিছুটা রোমাঞ্চহীন বিশ্বাস খুঁজে নেবো
'আলগা করো গো খোঁপা'র মত গান ধরে
কবিতা কাননে গেঁথে যাবো কাঁচা ফুলের মালা।

প্রতিদিন ভোরে সূর্যের কাছে চোখ রাখি
যে চোখে তোকে, তোদের কাউকে একটু দেখবো বলে,
নিয়তিকে ডাক দেই -বীথি, কোন্ সুদূরের রোদ্দুরে আছো?
কোনো উত্তর আসে না বলে কবিতাতে দেই ওম;

প্রত্যেহ নিঃশ্বাসের করিডোরে হিস্যের চাবি ঘুরাই
বীথি আর উর্মিদের উড়ন্ত ইষৎ সোনালিকেশে হিসেব মেলায়
রাঙাপরীর আশায় থেকে ইচ্ছের মৃত্যুপুরি খুঁজি!
ইচ্ছেরা পূঁজিবাদের বংশীবাদক হতে চলায়
রাতের সব হিসেব চুকে দিতে একহাত করেছে অবিশ্বাসকে
আর সব হারিয়েছি আলো ভেবে আলেয়ার মরীচিকাতে!


সাহিত্যের করাতকলে
 

স্নিগ্ধ জবানটাকে তোরা তেলে রাখিস
তেলের তৈজসে ঘ্রাণ বাড়ে না
বাড়ে কৃত্রিমতা!
সালাম নেয়া বনি আদম সুরত বদলায়
চেতনার নতুন ঢোল পেটাতে
হারায় সে ভদ্রতা!

আধুনিকতার আড়ালতলে শোকে মুহ্যমান
পরকালের সুন্দর কামনা
গায়ে তার পাঞ্জাবী
জ্ঞানবৈতরণির সাঁঝের মায়ায় উপদেশ শুনি
ভাবের দরিয়ায় দয়ারবাণী
চেতনা, হারায় আরবী!

সাহিত্যের করাতকলে নাককেটে সাজে সুবিধাবাদী
মরিবার সময় সোজা হবে, যত সব যুক্তিবাদী!


মিথ্যেরা গল্প বলা প্রতিযোগিতা বাড়ায়


সে দিন এক রক্তখেকো কুমির দেখতে পেয়েছি
কুমিরটি খাচ্ছে তো খাচ্ছে
গিলতেই আছে ধুমড়ে মুছড়ে সব!
নির্মমতা আর কুমিরের খাদ্য যেন আয়নাঘর!

রক্তের নুনতাস্বাদে পেট ভরে নি
ভাঙেনি বিশ্বাসি দেশপ্রেমের
ভেঙে চলেছে মুষ্টিবদ্ধ হাতের রুপরেখা।

খিদের চোটে সত্যরা বের হয় জানি
মিথ্যেরা গল্প বলা প্রতিযোগিতা বাড়ায়
পেট্রোদাসত্বে একেকটা হয় কর্পোরেট রাজহংসু্!

কবিতার মত সত্যরা আজ তেলচাটা দালাল
বিবেকের মত সত্যরা আজ পা চাটা গোলাম
দালাল গোলামে ছেয়ে গেছে আমার রাজমণিহার
রঙিন চশমায় আমি আস্ত একটা নপংশুক! 


বিশ্বাসের অববাহিকায় 


অন্ধকারে ধূমায়িত পৃথিবী
বিষাদের বিচ্ছুরণ আর লেলিহান শিখায় কাঁদছিল রাতের প্রহর
দিনের কলেবরে চোখ - অবদমিত
বিশ্বাসে কাঁটাগুল্মের আঘাত,
জাতিকে নিয়ে গেছে অন্ধকারের গুহায়।
গুহা আলোকিত নূর নবীর পদছায়ায়
হেরাগুহার আলোর বিচ্ছুরণে ইচ্ছেরা প্রশস্তি খোঁজে
এক মহামানবের ভালোবাসায়।

আপন আলোয় আইয়্যামে জাহিলিয়াতের বিদায়
শান্তির সুবাতাস জাজিরাতুল আরবব্যাপি
অধিকারের সুউচ্চ মাকামে ওমরের পদার্পণ
বিশ্ববাতাসে ছড়িয়ে পরে বিশ্বনেতার আহবান
মুক্তির পয়গাম কাঁধে মক্কা-মদীনা বিজয়
অর্ধপৃথিবী কেঁপে ওঠে সুশীতল শান্তির বাতায়নে

মুক্তির মিছিল দীর্ঘ হতে হতে
বেহায়াদের পথ কন্টাকীর্ণ
চাঁদের আলোর কাছে বন্ধক ছিল সকল অন্ধকার!
বিশ্বাসের অববাহিকায় জেগেছিল মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের তালু
বাইয়াতে মুক্তির হায়াত বেড়ে 
জাতি পেয়েছিল চিরমুক্তির সুসংবাদ
কালিমা মুখে লা শরীক আল্লাহ।

জিন্দেগীর বেহালায় - তিনি মহাসেনাপতি, 
মহারাস্ট্রনায়ক, মনমজিয়ায় তিনি অাদর্শ পুরুষ, মিজানের পাল্লায় সুচতুর ন্যায়বিচারক,
অধিকারের শোকেসে তিনি অাদর্শ পতি।

কোন জনমে তোদের হবে অাক্কেল!
মুহাম্মদের নূরে গোটা জাহান অালোকিত
ঘরে ঘরে মুক্তির পরশ ছায়ায় বন্ধু খুশী
অারশে অাজিমের মালিকের পেয়ারা রাসুল
সাল্লেল্লাহু অালায়হি ওয়াসাল্লাম।


প্রেম তো জীবিত আজ তুলসিপাতার গোড়ায়।


রাতের শোকেস সাজাতে 
কিছু বউ প্রয়োজন,
'বউ কথা কও' র মত নয়!
প্রয়োজন প্রজননশৈলিতে মালাগাঁথার।

হরগঙার মৃনাল দা কোথায় আছে?
কেমন আছে? কেউ বলবে না নিশ্চিত!

প্রেম তো জীবিত আজ তুলসিপাতার গোড়ায়।

বাবরের বুবলির হাদা প্রেমিক
আজ কাঁথাবালিশের ডকুমেন্ট!
ঔরসের প্রবাহিত স্রোতধারা ;

বউ হীনে রাত কাটলেও
গোলাভরা সংসার হয় না বহুদিন।
চাষাবাদের কর্ষণলীলায় বর্ষণের দৌড় বড় শক্তিশালী!

ল্যাটিনের দেশে গেলেই বউ রা রাত খোঁজে
রাতের পিঠে চড়ে স্বামীর ডকুমেন্ট দাঁড়ায়
পুঁজা ' তুমিও চেয়ে নিও এবারের খান যাত্রার পেটিকোট!


 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন